Styesনাক কান গলা 

চোখের আঞ্জনির কারণ, উপসর্গ, ঔষধ, প্রতিরোধ, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা (Stye/Hordeolum)

আঞ্জনি কি?

অক্ষিপত্রের ধারে কানেকটিভ টিসুর মধ্যে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্ফুটিকা বা উদ্ভেদ দেখা যায় তাকে চোখের অঞ্জনি বলে। একে হোর্ডিওলামও বলে, এটা এক ধরণের সংক্রমণ যা চোখের পাতাকে প্রভাবিত করে। অঞ্জনি চোখের পাতার ভেতরে বা বাইরের পৃষ্ঠতলে হতে পারে এবং চোখের পাতার গ্ল্যান্ডকে প্রভাবিত করে। আঞ্জনি চোখের পাতার ওপর একটি ছোট ব্রোণের মত বা ফোলা হিসাবে দেখা যায়।

 

আঞ্জনি রোগের প্রধান কারণ কি ?

  • আঞ্জনি রোগটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে ঘটে থাকে।
  • আঞ্জনির ঝুঁকির কারণগুলির অন্তর্ভুক্ত হলো খাদ্যে পুষ্টির অভাব এবং ইমিউনোকম্প্রোমাইজড অবস্থা ।
  • সংক্রমণ রোগ হেতু এটি স্পর্শের দ্বারা ছড়ায়ে, রুমাল বা অন্যান্য আনুষাঙ্গিক ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।
  • আবহাওয়ার দোষ হেতু, অন্য যে কোন রোগের উপসর্গ বা কোন কঠিন রোগ চাপা পড়ে।
  • গ্রান্ড জাতীয় কোন দোষ হেতু এই জাতীয় রোগ হতে পারে।
  • নিম্নমানের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি স্টাইয়ের আঞ্জনির ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
  • কখনও কখনও অত্যাধিক শুষ্ক চোখ সংক্রমণের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

 

চোখের আঞ্জনি রোগের প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি?

  • একটি বড় বা ছোট ছোট ২/৩টি ফুসকুড়ির মত উদ্ভেদ দেখা যায়। এটি সাধারণত চোখের কাছাকাছি হয় এবং ব্রোণর মতো দেখায়।
  • পেকে পুঁজ হয়, এটি ছোট এবং লাল রঙের। যেহেতু এর মধ্যে পুঁজ আছে , এর মধ্যে একটা ছোট হলুদ কেন্দ্র থাকবে।
  • আঞ্জনি অত্যন্ত যন্ত্রনা ও ব্যাথাযুক্ত হয়ে থাকে। এর উপস্থিতি থাকলে চোখের অংশেও ব্যাথা সৃষ্টি করে যা চোখ খুললে বা বন্ধ করলে বেড়ে যায়।
  • কখনও চোখের পাতা গুলো ফুলে যায় এবং ওই ফোলা থেকে কিছু পুঁজ বের হতে পারে।
  • চোখ নড়াচড়া করতে অস্বস্তি হয় এবং সবসময় মনে হয় চোখের মধ্যে  ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা উপস্থিত রয়েছে।
  • অনেক সময় অঞ্জনি খড়িবৎ অবস্থা প্রাপ্ত হয়, তাকে মেইবোমিয়ানসিস্ট (Meibomian cyst) বলে।

 

আঞ্জনি রোগের নির্ণয় এবং চিকিৎসা কিভাবে হয় ?

  • আঞ্জনি রোগটি নির্ণয় করা অত্যন্ত সহজ এবং কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়না।
  • একজন চিকিৎসক আলোর নিচে দেখলেই আঞ্জনি নির্ণয় করে দিতে পারেন।
  • অনেক সময় আঞ্জনি নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে কিছুদিন সময় লাগে।
  • যদি আঞ্জনি স্থায়ী হয় বা ব্যথা বেশি হয়, সোক্ষত্রে ডাক্তার চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন।
  • প্রয়োজনে আঞ্জনির সংক্রমণ সারাতে এবং ব্যাকটেরিয়া অপসারণ করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক্স দেওয়া হতে পারে।
  • পুঁজ জমা হওয়ার সাথে আঞ্জনির ওপর অনেক চাপ সৃষ্টি হয়, এইচাপ মুক্ত করার জন্য একটি ছোট ফুটো করা হয়।

 

চোখের আঞ্জনি ‘র হোমিওপ্যাথিক ঔষধ

  • ষ্ট্যাফিসেগ্রিয়াঃ যদি অঞ্জনির মধ্যে পুঁজ উৎপন্ন না হয় এবং শক্তভাব ধারন করে তবে উপকারী।

  • পালসেটিলাঃ ঘন হলদে বর্ণের স্রাব। চোখ চুলকায় এবং জ্বালাপোড়া। চোখের পাতা স্ফীত, ফুসকুড়ির ন্যায় উদ্ভেদ, আঞ্জনি গরম ঘরে বৃদ্ধি।

  • হিপার সালফঃ পালসেটিলাতে ফল না পেলে এবং যখন অঞ্জনি দেখতে লাল হয় এমন অবস্থায় উপকারী।

  • উপরের পাতার আঞ্জনিঃ এলাম, কষ্টিকাম, মার্কসল, ফসফরিক এসিড, সালফার।

  • নিচের পাতার আঞ্জনিঃ ক্যালকেরিয়া কার্ব, ক্যানথারিস।
  • বাম দিকের আঞ্জনিঃ কলসিকাম, লাইকোপডিয়াম, পালসেটিলা, ষ্ট্যাফিসেগ্রিয়া।

 

আঞ্জনি রোগের বায়োকেমিক ঔষধঃ

ক্যালকেরিয়া ফ্লোরঃ আঞ্জনি শক্ত, ঈষৎ লাল এবং পুঁজময়।

নেট্রাম মিউরঃ আঞ্জনি শক্ত বা নরম একটি বা একাধিক হোকনা কেন এই ঔষধ সেবনে উপকার।

Leave a Comment